সোমবার ১৩ মে ২০২৪
Online Edition

দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলো লোকে লোকারণ্য 

স্টাফ রিপোর্টার : টানা পাঁচ দিনের ছুটির সুযোগ নিয়ে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করছে কক্সবাজারে। একইরকম দেশের অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও ভিড় লাগার খবর পাওয়া গেছে। গত বুধবার থেকে পর্যটক আসতে শুরু করে দেশের প্রধান প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে। জানা গেছে, সাগর পাড়ের হোটেল-মোটেলগুলো আগেই বুকিং হয়ে যায়। তবে অভিযোগ রয়েছে পর্যটকদের ভিড় দেখে কক্সবাজারের বেশ কিছু হোটেল-মোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। 

গত বুধবার থেকে রোববার এ সময়ের মধ্যে বৃহস্পতিবার অফিস-আদালত খোলা থাকলেও অনেকেই এ দিনটি ছুটি হিসেবে অতিবাহিত করছেন। এ কারণে কক্সবাজারমুখী বেড়েছে পর্যটকের ভিড়। প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতির কারণে কক্সবাজার সাগর পাড়ের কয়েকটি আবাসিক হোটেলে আবারো গলাকাটা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সাগর পাড়ের হোটেল অভিসার নামের একটি আবাসিক হোটেলের দুই হাজার টাকার কক্ষের ভাড়া উঠেছে ৭-৮ হাজার টাকা। 

অপরদিকে হোটেলটির একটি কক্ষ একদিনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়না বলে জানান। কমপক্ষে দুইদিনের জন্য নিতে হবে এবং ভাড়া দাবি করা হয় দৈনিক সাড়ে ৮ হাজার টাকা। অথচ হোটেলটির ১০০ গজ দূরত্বের পাঁচ তারকা মানের হোটেল সী গালে ৫০ ভাগ ছাড় দিয়ে প্রতিকক্ষ ভাড়া দেওয়া হচ্ছে পাঁচ হাজার টাকায়। 

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত বুধবার সকাল থেকে পর্যটকের ঢল নেমেছে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্ট, হিমছড়ি, ইনানীসহ সকল পর্যটক স্পট পর্যটকে সরগরম হয়ে উঠেছে। ভিড় রয়েছে শহর ও পর্যটন এলাকার বিভিন্ন সড়ক-উপসড়কেও। রিজার্ভ ছাড়া যাত্রী না তোলায় রীতিমতো দেখা দিয়েছে যানবাহন সংকট। গণপরিবহণগুলো পর্যটকদের রিজার্ভ ভাড়া ধরতে গিয়ে স্থানীয়দের এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ প্রতিনিয়ত। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা কয়েকদিনের ছুটিতে কয়েকশ' কোটি ব্যবসা হতে পারে। পর্যটক আগমনে খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

পূজা ও ঈদের ছুটি কিংবা অন্য কোনো সময় ছুটিতে সিলেটকে বেছে নেন পর্যটকরা। ইট পাথরের যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে ছুটে আসেন প্রকৃতির নির্মল পরশে। এর ব্যত্যয় ঘটেনি এবারের পূজার ছুটিতেও।

এই ক’দিনের ছুটিতে সিলেট পেয়েছে বিপুল সংখ্যক পর্যটক। অনেকে এক মাস/পনের দিন আগে থেকে বুকিং দিয়ে রেখেছেন হোটেল-মোটেল। তাই বলা চলে সিলেট এখন পর্যটকদের দখলে। টানা কয়েকদিনের ছুটিতে সপরিবারে, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সিলেটে অবস্থান করছেন লাখো পর্যটক। দিনের বেলায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন তারা।

সবুজ গালিচা মোড়ানো চা বাগান, পাহাড়ের বুক চিড়ে মিতালি করে নেমে আসা ঝর্ণা, স্বচ্ছ জলরাশি, জলের গহিনে থাকা নুড়ি পাথর আর সবুজ অরণ্য পর্যটকদের মন কাড়ে।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল লাউয়াছড়ার অনিন্দ সুন্দর সবুজ অরণ্য আর বাইক্কা বিলের পাখি এবং মাধবকু-ের ঝর্ণা দেখতে, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, প্রাচ্যের নিউজিল্যান্ড খ্যাত তাহিরপুরের নীলাদ্রি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক। এছাড়া অলিকূল শিরোমনি হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরান (র.) মাজার জিয়ারত করতেও ভিড় করছেন সিলেটে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। টানা ছুটিতে হ্রদ, পাহাড় আর মেঘের মিতালী উপভোগ করতে হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে রাঙামাটিতে। জেলার দেড় শতাধিক হোটেল, মোটেল, কটেজের কোথাও খালি নেই একটি রুমও। পর্যটন মৌসুম শুরুর আগেই এত পর্যটকের আগমনে খুশি ব্যবসায়ীরা। রাঙামাটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, মেঘের রাজ্যখ্যাত সাজেক ভ্যালী। নগর জীবনের ক্লান্তি দূর করে নিজেকে সতেজ করতে প্রকৃতির মাঝে খুঁজে নিচ্ছে প্রশান্ত। প্রকৃতির এমন রুপ দেখে মুগ্ধতার কথাই জানালেন ভ্রমণপিপাসুরা।  

ঢাকা থেকে আসা জান্নাতুল নাঈম বলেন, প্রথম বার রাঙামাটি আসলাম, নদী আগেও দেখেছি, এই প্রথম পাহাড় দেখলাম, হ্রদ পাহাড়ের মিতালী যে এত মুগ্ধকর তা আমার জানাই ছিল না। ঢাকায় বসে ভাবতাম আমাদের দেশে কক্সবাজার ছাড়া দেখার মতো কিছুই নেই। রাঙামাটি এসে তো আমার পাগল হবার উপক্রম হয়েছে। প্রকৃতি যে কতটা সুন্দর ও স্নিগ্ধ হতে পারে তা এখানে না এলে কেউ বুঝতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানতামই না এমন সুন্দর পরিবেশ আমাদের দেশেই আছে। এক কথায় আমি রাঙামাটির প্রেমে পড়ে গেছি, একবার নয় বারবার আসব।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ